স্বদেশ ডেস্ক:
আলু পাইকারি বাজার থেকে কিনে আনছেন ৩৯ টাকায়। অথচ বিক্রয় স্লিপে লিখে দেয়া হচ্ছে ৩০ টাকা! আড়তদারদের এই কারসাজিতে দিশেহারা খুচরা বিক্রেতারা। ৩৯ টাকায় কিনে তারা কোনোভাবেই ৪৫ টাকার নিচে আলু বিক্রি করতে পারছেন না। আর ক্রেতারা দুষছেন এই খুচরা বিক্রেতাদেরকেই। যত ঝামেলা সামলাতে হচ্ছে তাদের। আলুর দাম বেশি রাখার দায়ে শাস্তি আর জরিমানাও তাদেরই গুনতে হচ্ছে।
রাজধানীর মানিকনগর বাজারের একাধিক দোকানি জানান, সরকারিভাবে আলু পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ৩০ টাকায় নির্ধারণ করে দিলেও পাইকারেরা আলু বিক্রি করছেন ৩৯ টাকা কেজিতে। অথচ আড়ত থেকে যে স্লিপ ধরিয়ে দেয়া হয় তাতে দাম লেখা থাকে ৩০ টাকা। যাতে কোনো আড়তদার বা পাইকারি বিক্রেতা আইনের দৃষ্টিতে দোষী না হন। এই স্লিপ নিয়েও খুচরা বিক্রেতারা ব্যবসার স্বার্থে চুপ করে থাকতে বাধ্য হন। না হলে তাদের কাছে আর আলু বিক্রি করা হবে না! কবির নামের এক বিক্রেতা বলেন, তারা ৩৯ টাকায় কিনে এর সাথে পরিবহন খরচসহ অন্যান্য খরচ দিয়ে ৪৫ টাকায় কেজি বিক্রি করলে দুই-এক টাকা লাভ হয় কেজিতে।
বাজারে পেঁয়াজের দাম সেই ৯০ থেকে ১১০ টাকাতেই রয়ে গেছে। আর আমদানি করা বড় আকৃতির পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। তবে স্বাদ নি¤œমানের হওয়ায় ওই পেঁয়াজ ক্রেতারা সাধারণত কিনতে চান না। বিশেষ করে যে পেঁয়াজের রঙ কিছুটা সাদাটে ওই পেঁয়াজে তেমন কোনো স্বাদ-গন্ধ নেই বললেই চলে। মানুষ ওই পেঁয়াজ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। দেশী পেঁয়াজের মতো রঙ এমন বড় আকৃতির পেঁয়াজের চাহিদা আছে। দেশী পেঁয়াজের মতোই ওই পেঁয়াজে ঝাঁজ আছে বলে জানিয়েছেন ভোক্তারা। এ দিকে টিসিবি যে পেঁয়াজ গাড়িতে করে বিক্রি করছে সেই পেঁয়াজের মধ্যে অনেক পচা পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
টিকাটুলি মোড় থেকে কাইউম নামের এক ক্রেতা টিসিবির গাড়ি থেকে পেঁয়াজ কেনার পর জানিয়েছেন, তিন কেজি ৩০০ গ্রামের একটি প্যাকেট করে আগে থেকে রেখে দেয়া হয় গাড়ির মধ্যে। দাম নেয় ১০০ টাকা। পেঁয়াজ বাসায় নেয়ার পরে দেখেন প্রায় ২৫০ গ্রাম পচা।
বাজারে সবজির দাম আরো বেড়েছে। যে সবজি ৭০-৮০ টাকা ছিল তা এখন শতকের ঘরে গেছে। গাজর, টমেটো, শিম, করলা, উস্তে, বেগুন, বরবটির কেজি ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বাজার ও মানভেদে গাজরের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। গত কয়েক মাসের মতো পাকা টমেটোর কেজি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। শিমের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। এ ছাড়া বরবটি ৮০ থেকে ১০০ টাকা, বেগুন ৮০ থেকে ১১০ টাকা, উস্তে ৯০ থেকে ১১০ টাকা কেজি, ছোট একটি ফুলকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে শীতের সবজি বাঁধাকপিও। ঢেঁড়সের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা। পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, ঝিঙা ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁকরোল ৬০ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। লাউয়ের পিস বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। এক হালি কাঁচা কলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ এখনো দেড় শ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।